লাইফস্টাইল

করোনায় মসলা চা পান করতে করতে বিরক্ত? চেখে দেখতে পারেন এই পাঁচ রকম চা

করোনাকালের শুরু থেকেই অনেকে মসলা চা পান করছেন। তবে লবঙ্গ, গোলমরিচসহ আস্ত গরম মসলা ফোটানো এই ঝাঁজালো চা মাত্রাতিরিক্ত পান করলে অনেকেরই অ্যাসিডিটি হতে পারে। আর দুই বছর ধরে বেলায় বেলায় সেই একই মসলা চা পান করতে আর কাঁহাতক ভালো লাগে! শ্বসনতন্ত্র ও ফুসফুসের জন্য উপকারী, ঠান্ডা–কাশির কষ্ট উপশমে এমন অনেক পানীয় যুগ যুগ ধরে প্রচলিত আছে বিভিন্ন দেশে। তারই কয়েকটির দিকে একটু নজর দেওয়া যাক।

১. তুলসী চা

তুলসীকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘হোলি বেসিল’। ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি প্রাচীন আয়ুর্বেদশাস্ত্রে তুলসীর ঔষধি গুণের কথা উল্লেখ আছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, তুলসীর রস এবং এর পাতা শুকিয়ে চা তৈরি করে পান করলে অনেক উপকার হয়। তুলসীর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ আছে। শ্বসনতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী এই তুলসী চা। ফ্লু বা অ্যালার্জিজনিত ঠান্ডায় তুলসী চা পান করলে আরাম হয়। ফুসফুসে জমে থাকা শ্লেষ্মা বের করতে এর ভূমিকা রয়েছে। এর সুগন্ধ খুবই সতেজ ভাব আনে মনে। মুখের দুর্গন্ধ রোধেও তুলসী খুব কার্যকর।

২. পুদিনা চা

পুদিনা বা পিপারমিন্টের গন্ধটাই মনে চনমনে ভাব জাগায়। মেনথল নামের উপাদানের জন্য পুদিনা চা পান করলে মুখ ও গলায় একরকম ঠান্ডা শিরশির অনুভূতি জাগে। পুদিনা চা পেটের সমস্যার মহৌষধ। আর কোভিডের বর্তমান ধরনে অনেকে বমিভাব ও পেটের অসুখে ভুগছেন।

ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের মতো কষ্টদায়ক উদরপীড়ায় পুদিনা চা অনেকটা স্বস্তি দেয়। এর সুগন্ধ মাইগ্রেন–জাতীয় মাথাব্যথার জন্য খুব উপকারী। মুখশুদ্ধি হিসেবেও পুদিনাপাতা ব্যবহার করা যায়। পুদিনার চা বদ্ধ সাইনাস সমস্যায় আরাম দেয়। করোনাজনিত অনিদ্রায় যাঁরা কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা পুদিনা চা পান করতে পারেন। পুদিনায় ভালো ঘুম হয়, এমনটাই গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়।

করোনাজনিত অনিদ্রায় যাঁরা কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা পান করতে পারেন পুদিনা চা
করোনাজনিত অনিদ্রায় যাঁরা কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা পান করতে পারেন পুদিনা চা

৩. রোজেল টি

প্রকৃতির এক অত্যাশ্চর্য দান এই চুকর, চুকই, মেস্তা বা রোজেল। বৃন্তসহ এর পাপড়ি ছাড়িয়ে, শুকিয়ে গরম পানিতে দিলেই অপূর্ব সুন্দর লাল পানীয় তৈরি হয়, দুনিয়াজুড়ে সবাই যাকে ‘হিবিসকাস টি’ বলে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই রোজেল চা। উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণে ভালো ভূমিকা থাকতে পারে। যাঁরা করোনা–পরবর্তী যকৃতের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য রোজেল চা খুব উপকারী। যেকোনো সংক্রমণে এই চা পান করলে উপকার পাওয়া যায়। ফুসফুস ভালো রাখতে এবং ঠান্ডা–কাশির সঙ্গে লড়তে এর জুড়িমেলা ভার।

দুনিয়াজুড়ে সবাই রোজেল চাকে ডাকে ‘হিবিসকাস টি’ নামে
দুনিয়াজুড়ে সবাই রোজেল চাকে ডাকে ‘হিবিসকাস টি’ নামে

৪. ক্যামোমাইল টি

মন–মাতানো সুগন্ধি ফুল ক্যামোমাইল। যুগ যুগ ধরে সাধারণ ঠান্ডা–কাশি উপশমে শুকিয়ে রাখা ক্যামোমাইল ফুল গরম পানিতে ভিজিয়ে সেই চা পান করা হয়। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে এর অনন্য সব স্বাস্থ্যগুণের কথা জানা যায়। ক্যামোমাইল টি কাশি ও কফে আরাম দেয়।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত ক্যামোমাইল চা পান করলে শরীরে হিপিউরেট নামের উদ্ভিজ্জ ফেনোলিক তৈরি হয়; যা ব্যাকটেরিয়ার খারাপ প্রভাব ও সংক্রমণকে অনেকটাই রুখে দিতে পারে। কাশি বা অ্যালার্জি-অ্যাজমার কারণে শ্বাসনালির সংকোচন প্রবণতার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে ক্যামোমাইল চা। এক্ষেত্রে ক্যামোমাইল ফুল ভিজানো পানির ভাপও বেশ উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, এই চা নিয়মিত পান করলে ঘুম ভালো হয়। করোনা–পরবর্তী অনিদ্রায় ভোগা বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য যা সুসংবাদ।

কাশি ও কফে আরাম দেয়  ক্যামোমাইল টি

সম্পরকিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও আরও দেখুন
Close
Back to top button