তথ্যপ্রযুক্তি

IMEI কী.? IMEI -International Mobile Equipment Identity.

IMEI কি?

আইএমইআই(IMEI) এর পূর্নরূপ হলো International Mobile Equipment Identity। এই IMEI প্রতিটি মোবাইল ডিভাইসের জন্য একটি সংখ্যাসূচক পরিচয় বা সংখ্যাসূচক আইডিন্টিটি। আর এই কারনে প্রতিটি আইএমইআই নম্বরই অনন্য তথা একটি আরেকটির থেকে ভিন্ন।

মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানির কাছে আপনার ফোনের সব তথ্য এই আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকে। আর তাই আপনি হয়ত যখন কোন কারনে আপনার ফোন সার্ভিসিং এ নিয়ে গিয়েছেন কাস্টমার কেয়ারে, তারা আপনার ফোন খুলে আইএমইআই নম্বরটি চেক করে ফোনের সব ডাটা বের করেছে ; যেমনঃ ওয়ারেন্টি আছে কিনা, কবে বিক্রি হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। সাধারনত মূল আইএমইআই নম্বরটি হয়ে থাকে ১৪ ডিজিটের। তবে পুরো আইএমইআই নম্বরটি ভেরিভাই এর জন্য এর সামনে আরো একটি সংখ্যা থাকে যা মিলে পুরো আইএমইআই নম্বরটি হয়ে যায় ১৫ ডিজিটের। তবে এখন অনেক আইএমইআই নম্বরে ডিভাইসের সফটওয়্যার ভার্সন সংস্করন এর জন্য আরেকটি সংখ্যা থাকে, যার ফলে আইএমইআই নম্বরটি হয়ে যায় ১৬ ডিজিটের। আর এসব আইএমইআই নম্বরকে IMEISV’ও বলা হয়।

২০০৪ সাল থেকে আইএমইআই (IMEI) নাম্বার AA-BBBBBB-CCCCCC-D ফরম্যাটে বিন্যাস্থ হয়ে আসছে। আর এখানে A এবং B সেকশনকে বলা হয়ে থাকে Type Allocation Code বা TAC। আর IMEI নম্বরের এই TAC অংশ থেকে ফোনটির ম্যানুফ্যাকচারার বা তৈরিকারক এবং ফোনটির মডেল নম্বর সম্পর্কে জানা যায়। যেমনঃ স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এর TAC কোড হল 32-930400, গুগল নেক্সাস ৪ বা এলজি E960 এর TAC কোড হল 35-391805 ইত্যাদি। অর্থাত ১৫ ডিজিট বা ১৬ ডিজিটের সম্পূর্ণ আইএমইআই নম্বরে এই TAC হয়ে থাকে ৮ ডিজিটের, এই ৮ ডিজিট এর ভেতর ২ টি ডিজিট আবারও ভেরিভাই এর জন্য, তাই মূল TAC হয়ে থাকে ৬ ডিজিটের ।

এবার আসি C সেকশনের কথায়। আইএমইআই নম্বরের ভেতরকার C সেকশনটি মোবাইল ফোনের একটি ইউনিক বা অনন্য সিরিয়াল নম্বর নির্দেশ করে। এখানে স্মার্টফোন তৈরিকারকরা একেকটি স্মার্টফোনে তাদের পছন্দমত ইউনিক নম্বর দিয়ে থাকে। আর এই D সেকশনে যে একটি নম্বর থাকে তা সম্পূর্ণ আইএমইআই নম্বরটি ভেরিফিকেশনের জন্য। ব্যাস! এইসব নিয়ে আপনার স্মার্টফোনের আইএমইআই (IMEI) নম্বর।

আপনি অনেক উপায়ে আইএমইআই(IMEI) নম্বরটি দেখতে পারেন । তবে আমার কাছে ফোনের ডায়ালার অ্যাপ থেকে এই নম্বরটি চেক করা সবচাইতে সহজ লাগে। আপনার ফোনের ডায়ালর অ্যাপে *#06# ডায়াল করলেই ফোনের আইএমইআই নম্বরটি দেখতে পারবেন।

আবার এন্ড্রয়েড ডিভাইসের Settings>About>Phone>Status এ গিয়ে আপনি আপনার IMEI নম্বরটি দেখতে পারবেন। আবার অ্যাপেল ইউজাররা Settings>General>About এ গিয়ে IMEI নম্বর দেখতে পারবেন। আপনার আপনার ফোনের বক্সে এবং ওয়ারেন্টি কার্ডেও আপনি IMEI নম্বরটি খুঁজে পাবেন। যাই হোক,যেখান থেকেই দেখুন না কেন,অবশ্যই নম্বরটি নোট করে রাখবেন।

অনেক জাল মোবাইল ফোন, যেমন: নকল আইফোন এগুলোতে IMEI নাম্বার থাকে না। আবার অনেক নকল বা জাল ফোনে খারাপ বা কারাপ্টেড IMEI নম্বর থাকে। তাই আপনার ফোন আসল কিনা, বা IMEI নম্বর ভ্যালিড কিনা তা জানতে IMEI.info এর মত অনলাইন চেকার ব্যবহার করতে পারেন। একটা কথা মনে রাখবেন, যে ফোনে IMEI নেই বা কারাপ্টেড IMEI -এর মানে সে ফোন নকল এবং আপনি কেনার আগে IMEI চেক করে কিনবেন।

এখন অ্যাপেল বা শাওমির মত ওয়েবসাইটে তাদের ডিভাইসের IMEI ভেরিফাই করার অপশন থাকে, তাই কেনার আগে IMEI ভেরিফাই করে আসলটা কিনবেন।

IMEI হল একটি মোবাইল ডিভাইসের কমপ্লিট আইডেন্টিটি। ধরুন আপনার ফোন হারিয়ে গেছে, তবে আপনি নানা এনড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপ ব্যবহার করে, কেবল IMEI দিয়ে ফোনটি ট্র্যাক করতে পারেন। আবার আপনি আপনার হারিয়ে যাওয়া ফোনের জন্য থানায় অভিযোগ করতে গেলে, তারাও IMEI নাম্বার চাবে এবং তা দিয়ে আপনার ফোন ট্র্যাক করতে পারেন। গাড়িঘোরার জন্য একটি নম্বর থাকে যাকে বলা হয়, Vehicle Identification Number বা VIN ; আর মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে ঠিক একই IMEI..।
© Rafiq Nur/Farhan Fuad

ধনবাড়ী সংবাদ/Farhan Fuad

সম্পরকিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও আরও দেখুন
Close
Back to top button